Free Delivery on Makeup & Skin care purchases above 1500BDT
Store Locator
Acne Remedy
| by Mafruha Mehzabin

ব্রণ দূর করার ৭টি কার্যকর উপায়: প্রাকৃতিক ও চিকিৎসা ভিত্তিক সমাধান

ব্রণ একটি খুব সাধারণ ত্বকের সমস্যা, যা মূলত বয়ঃসন্ধিকালীন সময়ে বেশি দেখা গেলেও যে কোনো বয়সেই হতে পারে। তখন শুধু রূপই ক্ষুণ্ন হয় না, আত্মবিশ্বাসও কমে যায়। বিশেষ করে তরুণ-তরুণীদের মধ্যে এটি একটি সাধারণ সমস্যা। ব্রণ শুধু শারীরিক সমস্যা নয়, এর ফলে ত্বকের যে সৌন্দর্যহানি হয় তা মানসিক চাপের কারণও হতে পারে। তবে  চিন্তার কিছু নেই। কারণ, কিছু নিয়ম মেনে চললে এবং সঠিক পদ্ধতিতে যত্ন নিলে ব্রণ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

ব্রণের মূল কারণ:

ব্রণ সাধারণত কয়েকটি কারণে হয়ে থাকে:

  • ত্বকে অতিরিক্ত তেল উৎপাদন 
  • ত্বকের ছিদ্র বা পোরস বড় হয়ে যাওয়া বা ক্লগড হয়ে যাওয়া
  • বাক্টেরিয়া বা ফাংগাস এর আক্রমণ 
  • হরমোন পরিবর্তন, বিশেষ করে বয়োঃসন্ধিকালে কিশোর-কিশোরীদের ক্ষেত্রে, হরমোনাল রোগ হলে
  • অপুষ্টিকর এবং অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস
  • অতিরিক্ত মানসিক চাপ ও ঘুমের অভাব
  • অপরিষ্কার ত্বক বা বেশি মেকআপ ব্যবহার

ব্রণ (acne) দূর করার কিছু প্রাকৃতিক ও চিকিৎসা-ভিত্তিক উপায় আছে। নিচে কিছু কার্যকর পরামর্শ দেওয়া হলো:

১. জীবনধারা পরিবর্তন

  • পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা: প্রতিদিন দুইবার হালকা ক্লিনজার দিয়ে মুখ পরিষ্কার করুন। অতিরিক্ত তেল ও ধুলাবালি জমে ত্বকের পোরস আটকিয়ে ব্রণের সৃষ্টি করে, তাই নিয়মিত পরিষ্কার রাখা জরুরি। এজন্য ওয়েল ফ্রি এবং নন-কমেডোজেনিক ফেইসওয়াশ ব্যবহার করা উচিত। তবে বেশি ঘষাঘষি করলে ত্বক শুষ্ক ও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
  • পর্যাপ্ত পানি পান: দেহ থেকে টক্সিন দূর করার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো পর্যাপ্ত পানি পান। দিনে অন্তত ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি পান করুন।
  • তেল-মশলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন: অতিরিক্ত চিনি, দুগ্ধজাত খাবার, তেল-চর্বি এবং ফাস্টফুড ব্রণ বাড়াতে পারে। বেশি করে ফলমূল, শাকসবজি, বাদাম ও প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। অনেক ক্ষেত্রে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকেও ব্রণ হয়ে থাকে। তাই খাদ্যতালিকায় ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার যোগ করুন।
  • স্ট্রেস কমান: স্ট্রেস, কাজের চাপ ও ঘুমের অভাব হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করে, যা ব্রণ তৈরির অন্যতম কারণ। প্রতি রাতে অন্তত ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করা উচিত। স্ট্রেস কমাতে যোগব্যায়াম, মেডিটেশন কার্যকরী হতে পারে।

2. Tea Tree Oil

এটি অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল উপাদানে ভরপুর। অল্প পরিমাণ টি ট্রি অয়েল তুলোতে নিয়ে সরাসরি ব্রণের ওপর লাগাতে পারেন। তবে এলার্জি আছে কিনা তা জানার জন্য আগে প্যাচ টেস্ট করে নিতে হবে। এটি ব্রণ শুকাতে সাহায্য করে, ব্রণের প্রদাহ (Inflammation) কমায়।

3. হলুদ ও মধুর প্যাক

হলুদে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ও অ্যান্টিসেপটিক গুণ রয়েছে। মধু ত্বকে প্রাকৃতিক আর্দ্রতা বজায় রাখে। হাফ চা-চামচ হলুদের গুঁড়া বা হলুদ বাঁটা ও এক চা-চামচ মধু মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করুন। মুখে ১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ২-৩ বার ব্যবহার করুন।

4. অ্যালোভেরা জেল 

অ্যালোভেরা একটি প্রাকৃতিক উপাদান যা ত্বকের ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাস প্রতিরোধে কার্যকর। অ্যালোভেরা ত্বক ঠাণ্ডা করে এবং ব্রণের প্রদাহ কমায়। ব্রণের দাগ হালকা করে। প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে অ্যালোভেরা জেল মুখে লাগান।

5. চন্দন ও গোলাপ জল

চন্দনের গুঁড়া ও গোলাপ জল একসাথে মিশিয়ে মুখে লাগালে ত্বক পরিষ্কার থাকে এবং ব্রণ হ্রাস পায়। চন্দন ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে, গোলাপজল অতিরিক্ত তৈলাক্ত ভাব দূর করে। নিয়মিত ব্যবহারে ব্রণের দাগ হালকা হয়। 

6. লেবুর রস

লেবুতে রয়েছে প্রাকৃতিক অ্যাসিড, যা ব্রণের জীবাণু ধ্বংস করে। তুলায় লেবুর রস নিয়ে ব্রণের ওপর লাগিয়ে ১০-১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। তবে ভিটামিন-সি তে এলার্জি থাকলে চুলকানি হতে পারে। তাই আগে প্যাচ টেস্ট করে নিতে হবে। 

7. চিকিৎসা ভিত্তিক ব্রণ নিরাময়ের উপায়

যদি ঘরোয়া পদ্ধতিতে কাজ না হয়,ব্রণ বেশি বা দীর্ঘস্থায়ী হয় তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। নিচে কিছু চিকিৎসা ভিত্তিক উপায় দেওয়া হলো:

ওষুধ সেবন

  • অ্যান্টিবায়োটিক, অ্যান্টিফাংগাল ট্যাবলেট – বণের প্রকৃতির উপর নির্ভর করে দেয়া হয়। সাধারণত সিস্টিক একনে তে অ্যান্টিবায়োটিক দেয়া হয়ে থাকে। 
  • হরমোনাল থেরাপি – PCOS থাকলে,  দীর্ঘ দিন ব্রণ থাকলে, অ্যান্টিবায়োটিক বা রেটিনয়েডে খুব একটা উন্নতি হচ্ছে না এমন ক্ষেত্রে 
  • Isotretinoin – চরম মাত্রার ব্রণের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এই ওষুধ খাওয়া একদমই উচিত নয়

টপিকাল ক্রিম

  • Benzoyl Peroxide Cream – জীবাণু ধ্বংস করে
  • Retinoid Cream – পোরস খোলা রাখতে সাহায্য করে
  • Salicylic Acid – ডেড সেলস দূর করে ত্বক ক্লিন রাখে
  • Isotretinoin Cream – নিয়মিত ব্যবহারে ব্রণ ও ব্রণের দাগ কমে যায় 

স্কিনকেয়ার থেরাপি

এই সব পদ্ধতি চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে করানো উচিত। প্রয়োজনমত সেশন নিয়ে সেই অনুযায়ী সব সেশন শেষ করলে আশানুরূপ ফল পাওয়া যায়। এর মধ্যে আছে-

  • কেমিক্যাল পিলিং
  • লেজার ট্রিটমেন্ট
  • ডার্মা রোলিং (Microneedling)

ব্রণ প্রতিরোধে কিছু কার্যকর পরামর্শ

  • প্রতিদিন মুখ পরিষ্কার রাখুন। অয়েল-ফ্রি ফেসওয়াশ ব্যবহার করুন
  • হাত দিয়ে স্পর্শ করবেন না, ব্রণ ফাটাবেন না – এতে দাগ বা ইনফেকশন হতে পারে
  • সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। রাতের বেলা প্রয়োজনীয় স্কিনকেয়ার ব্যবহার করে ডাবল ক্লিনজিং করুন
  • ত্বকের সাথে মানানসই মেকআপ ব্যবহার করুন এবং রাতে অবশ্যই ভাল ভাবে ধুয়ে ফেলুন। মেকআপ ব্রাশ নিয়মিত পরিস্কার করুন।

 

ব্রণ কোনো জটিল রোগ নয়, তবে অবহেলা করলে এর প্রভাব দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। ব্রণ দূর করা কোনো একদিনের কাজ নয়। এটি সময় ও যত্নের বিষয়। সঠিক পরিচর্যা, স্বাস্থ্যকর অভ্যাস ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নেয়ার মাধ্যমে আপনি এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। প্রাকৃতিক উপায়গুলো প্রথমে ব্যবহার করে দেখতে পারেন। তবে যদি অবস্থা গুরুতর হয়, সেক্ষেত্রে ঘরোয়া টোটকা ব্যবহার করে, দেরি না করে দ্রুত একজন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া এবং সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নেয়াই বুদ্ধিমানের কাজ হবে। 

 

Sharing is caring

Relevant Products